অসাম্প্রদায়িকতার ভণ্ডামি ও দেশপ্রেম

0
944
blank
blank

জসিম উদ্দিন: আসাম বিধানসভার একজন বিধায়ক বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার প্রস্তাব দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। তিনি বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর নির্যাতন বন্ধ করতে ব্যর্থ হন, তাহলে যুদ্ধ করে এ নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। তবে এই যুদ্ধ বলতে সত্যি সত্যি গোলাবারুদ নিয়ে বাংলাদেশের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়া কি না সে বিষয়টি খোলাসা করেননি। আক্রোশ প্রকাশ করে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশকে উপযুক্ত শিক্ষা দিতে হবে, যাতে সংখ্যালঘু নির্যাতন বন্ধ হয়।

আসাম আলোচিত হচ্ছে ‘অনুপ্রবেশ’ ইস্যু নিয়ে। বিজেপি এই ইস্যুতে জোরালো প্রচার চালিয়ে এবার নির্বাচনী ফায়দা নিয়েছে। জয়ের পরও তারা এ ব্যাপারে কাজ করে যাচ্ছে। জুনে অনুষ্ঠিত দলের জাতীয় কর্ম সমিতির বৈঠক শেষে গৃহীত প্রস্তাবে এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, রাজ্যের মানুষকে ‘অনুপ্রবেশজনিত নিরাপত্তাহীনতা’ থেকে বাঁচানো হবে। এটাই আসামের নতুন সরকারের লক্ষ্য। তাদের মতে, ‘বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশ ঘটছে। দশকের পর দশক ধরে অনুপ্রবেশ সেখানকার জনমিতি পরিবর্তন করে দিয়েছে, যা সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের কফিনে পেরেক ঠুকে দিচ্ছে। ছিনিয়ে নিচ্ছে মানুষের জীবিকা। ধ্বংস করে দিচ্ছে রাজ্যের অর্থনীতি।’ বিজেপি নির্বাচনে তাদের বিজয়কে কামাখ্যা, ব্রহ্মপুত্র ও শ্রীমন্ত শঙ্করদেবকে উৎসর্গ করেছে। তাদের মতে, এরাই আসামের পরিচিতির প্রতীক। অনুপ্রবেশ রোধে বিজেপি ইতোমধ্যে বাংলাদেশ-আসাম সীমান্ত ‘সিল’ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ওই বৈঠকে আরো সিদ্ধান্ত হয়, বাংলাদেশ থেকে আসা হিন্দুদের সাথে মানবিক আচরণ করা হবে। তাদের যাবতীয় সহায়তা, এমনকি ভারতীয় নাগরিকত্বও দেয়া হবে। মুসলমানদের শরণার্থী হিসেবেও গণ্য করা হবে না। তাদের অনুপ্রবেশকারী হিসেবে চিহ্নিত করে ফেরত পাঠানোর কর্মসূচি নেয়া হবে।

‘বাংলাদেশ থেকে আসা’-এমন অভিযোগ এনে বিশাল জনসমষ্টিকে আসামে আগে থেকেই দাবিয়ে রাখা হয়েছে। উত্তেজনা ছড়িয়ে দিয়ে সংখ্যালঘু মুসলিমদের বিরুদ্ধে নির্মূল অভিযান চলছে অব্যাহত। ১৯৮৩ সালে আসামে লোকসভার একটি আসনে উপনির্বাচনের প্রাক্কালে ১০ হাজার সংখ্যালঘু হত্যা করা হয়েছিল। ভোটার লিস্ট সংশোধনের ধুয়া তুলে ওই নির্মূল অভিযান চালানো হয়। মাত্র ৬ ঘণ্টায় এত ব্যাপক হত্যা ও লুটপাটের সঠিক তদন্ত ও বিচার কোনোটিই হয়নি। এরপর থেকে থেমে থেমে সংখ্যালঘু নিধন চলছে সেখানে। আসামে ঘুরেফিরে কংগ্রেস ক্ষমতায় থেকেছে। দলের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে এমন সাম্প্রদায়িক নির্মূল অভিযানের দায় দলটির অন্যতম সদস্য হিসেবে আবদুল খালেকের ওপরও এসে যায়। একই কমিউনিটির মানুষ হয়ে আব্দুল খালেক নিজের দেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন রুখতে ব্যর্থ। অথচ বাংলাদেশে তেমন ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতির কখনো উদ্ভব হয়নি। ১৯৯০ সালে উগ্রবাদীরা যখন ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ উপড়ে ফেলে, বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর আক্রমণ কিংবা হামলার ঘটনা তখনো ঘটেনি। বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন ও প্রশাসন সাম্প্রদায়িকতা প্রশ্নে ঐক্যবদ্ধ মনোভাব প্রকাশ করে এসেছে সব সময়।
লাগামহীন বক্তব্যে আসামের সে বিধায়ক বলেন, ‘যে দেশের স্বাধীনতায় ভারতের অবদান সবচেয়ে বেশি, যে দেশ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অনেকাংশে ভারতের ওপর নির্ভরশীল, সে দেশে ক্রমাগতভাবে হিন্দুদের ওপর নির্যাতন হবে, এটা মানা যায় না।’ বাস্তবতা হচ্ছে, স্বাধীনতার সুফল হিসেব করলে ভারতের ঘরে তা উঠছে। বাংলাদেশে জনশক্তি রফতানি করে ভারত বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা আহরণ করে। জনশক্তি রফতানির পঞ্চম বৃহৎ আয় তারা অবিশ্বাস্যভাবে বাংলাদেশ থেকে করে থাকে। যেখানে বাংলাদেশে বিপুল বেকারত্ব বিরাজ করছে, বাংলাদেশ নিজেই যেখানে জনশক্তি বিদেশে রফতানির জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছে, ভারতীয় জনশক্তিকে বিদায় করে দিয়ে এদেশের বেকারত্ব ঘোচানো হোক, এমন দাবি কোনো পক্ষ থেকে ওঠানো হয়নি। ভারতে পর্যটন শিল্পে যুক্তরাষ্ট্রের পরই রয়েছে বাংলাদেশের অবস্থান। অন্য সব দেশকে বড় ব্যবধানে পিছিয়ে ফেলে ভারত বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় রফতানিকারক। মাত্র ছয় বছরে দুই দেশের বাণিজ্য ঘাটতি ভারতের অনুকূলে দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। ২০০৬-০৭ অর্থবছরে বাণিজ্য ব্যবধান ছিল প্রায় ২০০ কোটি ডলার। ২০১৩-১৪ সালে দ্বিগুণের বেশি বেড়ে এ ব্যবধান দাঁড়ায় সাড়ে ৫০০ কোটি ডলারের বেশি। এই অসমতা কমানোর তাগিদ অনুভবের বদলে বাংলাদেশী পণ্যের ওপর নানা ধরনের অশুল্ক বাধা আরোপ করে চলেছে ভারত।
বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে উত্তর-পূর্ব ভারতে পণ্য পরিবহন শুরু হয়েছে। কলকাতা থেকে আগরতলা যেতে ১৬০০ কিলোমিটার পাড়ি দিতে হয়। বাংলাদেশের অভ্যন্তর দিয়ে ৮০০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে আগরতলা যাওয়া যায় এখন। ওই পথ পাড়ি দিতে ৩০ দিন সময় ব্যয় হতো। উঁচু-নিচু ওই দীর্ঘ পাহাড়ি রাস্তার নিরাপত্তা ঠুনকো। যেকোনো সময় স্বাধীনতাকামীদের হামলার ভয় নিয়ে পথ চলতে হয় সেখানে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর নিরাপত্তা হেফাজতে থেকে মালামাল বহন করতে হয়। বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে এই রাস্তা মাত্র ১০ দিনে পার হতে পারছেন তারা। আপাতত নেই কোনো নিরাপত্তা উদ্বেগও। ঘুরপথে প্রতি টন মাল পরিবহনে ৬৭ ডলার ব্যয় হতো। সেটা কমে ৩৫ ডলারেরও নিচে নেমে আসছে। অর্থাৎ বাংলাদেশী টাকায়, প্রতি টন মাল পৌঁছাতে ভারতের প্রায় আড়াই হাজার টাকার বেশি বেঁচে যাচ্ছে। এ জন্য ট্রানজিট ফি ধরা হয়েছে মাত্র ১৯২ টাকা ২৫ পয়সা। এ দেশের বন্দরও ব্যবহারের সুযোগ পেয়েছে ভারত। ত্রিপুরার পালাটানায় বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য বাংলাদেশের রাস্তা ব্যবহার করতে দেয়া হয়েছে। অথচ ভারী যন্ত্রপাতি বহন করতে গিয়ে বাংলাদেশের রাস্তা ধসে পড়েছে। ওই সময় বহমান তিতাস নদীর ওপর বাঁধ দিয়ে রাস্তা তৈরি করে দেয়া হয় শুধু ভারতের ভারী যন্ত্রপাতি বহনের জন্য। পানি প্রবাহের বিকল্প পথ না রেখে এ ধরনের অনেকগুলো বাঁধ নির্মাণ করা হয়। এগুলো পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হলেও বাংলাদেশ সরকার তা করেছে।

কংগ্রেসের উল্লিখিত বিধায়ক প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে যেন উসকে দিতে চাইলেন। তিনি বললেন, মোদি একজন শক্তিশালী নেতা। তিনি প্রয়োজনে শক্তি প্রদর্শন করে নিশ্চিত করুন যে, বাংলাদেশে কোনো সংখ্যালঘু যেন নির্যাতিত না হন। তার মতে, বাংলাদেশে হিন্দুসহ সংখ্যালঘুরা দেশ বিভাজনের শিকার। বাস্তবতা হচ্ছে, সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনা বাংলাদেশের চেয়ে ভারতে বহুগুণ বেশি দৃশ্যমান। কিন্তু সংখ্যালঘু নির্মূলের যে ইতিহাস, সেটা বাংলাদেশে কখনো দেখা যায়নি। ভারতে বিভিন্ন প্রদেশে সংখ্যালঘু বিশেষত মুসলিমদের বসতি উৎপাটন করা হয়েছে। এটাকে এথনিক ক্লিনজিং বলা যেতে পারে। গুজরাটে মোদির মুখ্যমন্ত্রী থাকা অবস্থায় এমন ঘটেছে। সেখানে লোকসভার সদস্য এহসান জাফরিসহ গুলবাগের পুরো আবাসিক এলাকাটিকে জনবসতি শূন্য করে দেয় বিজেপির জঙ্গি গুরু সংগঠন আরএসএস। সাম্প্রদায়িক ইস্যুতে ভারতে এমন ভয়াবহ ঘটনার অনেক উদাহরণ রয়েছে। গরুর গোশত খাওয়ার কল্পিত অভিযোগে ভারতে বর্বরোচিত উপায়ে মানুষকে হত্যা করার ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে।

গত মাসের মাঝামাঝি বাংলাদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতারা নিজেদের নিরাপত্তা ইস্যুতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হস্তক্ষেপ চান বলে ভারতের বার্তা সংস্থা পিটিআই খবর পরিবেশন করেছে। রানা দাশগুপ্তকে উদ্ধৃত করে পিটিআই জানায়, ‘হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হিসেবে ভারতের কিছু করা উচিত। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে আমাদের প্রত্যাশা বেশি।’ অভিনেতা পীযূষ বন্দোপাধ্যায়কে উদ্ধৃত করে পিটিআই ওই প্রতিবেদনে জানায় যে, তিনি বলেছেন, ‘ভারতের কাছ থেকে চাপ না এলে মৌলবাদের বিষয়ে মনোভাবের পরিবর্তন হবে না। ভারত এ অঞ্চলের বড় শক্তি। প্রতিবেশী দেশে সংখ্যালঘুরা নির্মম হত্যাকাণ্ডের শিকার হলে দেশটি চুপচাপ বসে থাকতে পারে না।’ এ বিষয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হলে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্ত ও পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। পিটিআইয়ের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় যে, তারা কোনো ধরনের ভুল করেননি। ভুলভাবে উদ্ধৃত করার কোনো সুযোগ নেই। তারা জানান, ১৩ জুন পর্যন্ত রানা দাশগুপ্ত আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিবাদ পাঠাননি এ বিষয়ে। পিটিআইয়ের কলকাতা ও দিল্লি অফিস থেকে বিবিসি বাংলাকে বলা হয়, রানা দাশগুপ্ত যেভাবে বলেছেন, তাকে ঠিক সেভাবেই উদ্ধৃত করা হয়েছে। এরপর রানা ও পীযূষের আর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ছাড়াও দেশে আরো কিছু সংখ্যালঘু সম্প্রদায় রয়েছে। ছোটখাটো ওইসব সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের ঘটনা বাংলাদেশেও ঘটছে। ওইসব ঘটনা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে জমিজমা দখলকেন্দ্রিক। এগুলোর জন্য ক্ষমতাসীনেরা দায়ী। নিজেদের প্রভাব-প্রতিপত্তিকে কাজে লাগিয়ে সম্পদ বাড়িয়ে নেয়ার জন্য এ ধরনের ঘটনা ঘটানো তাদের জন্য সহজ। হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ নামে বাংলাদেশে যে সংগঠন রয়েছে, জাতীয় পর্যায়ে তাদের সব সময় সরব দেখা যায়। সরকার ও প্রেশার গ্রুপগুলোর মধ্যে তাদের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে, এমনটা অনুমান করা যায়। দুর্ভাগ্য হচ্ছে, তারা সংখ্যালঘুদের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে জোরালো অবস্থান নিতে দেখা যায় না। ক্ষুদ্র সংখ্যালঘুদের কথা বাদই দেয়া গেল, বৃহৎ সংখ্যালঘু নির্যাতিত হিন্দুদের পক্ষেও এরা কার্যকর অবস্থান নিতে পারেনি। কিন্তু এর নেতারা সংখ্যালঘুদের নাম ভাঙিয়ে সুযোগ সুবিধা ও ব্যাপক প্রচার পাচ্ছেন। এরপরও দেশের মানুষের প্রতি, সরকার ও প্রশাসনের প্রতি যে এদের আস্থা নেই, দিল্লির প্রতি অন্যায় আবদার তার প্রমাণ। আসামের কংগ্রেস নেতার মতো তারাও নির্লজ্জভাবে দিল্লির মসনদের ওপর নির্ভর করলেন।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নিজেই সাম্প্রদায়িক

ভারতের প্রখ্যাত সাংবাদিক কুলদীপ নায়ার লিখেছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে তার দুই বছরের শাসনের জন্য মার্কস দেয়ার ভার যদি আমার ওপর থাকত তাহলে তাকে ১০-এর মধ্যে ৪ দিতাম। এর বেশি নম্বর তাকে দেয়া যায় না। কারণ তিনি সরকারিভাবে হিন্দুত্ব কর্মসূচি চালু না করেও চরমপন্থী সংগঠন আরএসএস এবং বজরঙ্গি দলকে মাঠে চরে বেড়াতে দিয়েছেন। সঙ্কীর্ণ ভাবনা আর উগ্রবাদী কথাবার্তা ছড়ানোর জন্য রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ প্রধান মোহন ভগওয়াতকে আকাশবাণী ব্যবহার করতে দেয়া হয়। একইভাবে নেহরু লাইব্রেরির মতো সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে, নাগপুর অথবা নয়াদিল্লির ঝান্ডেওয়ালাদের আরএসএস সদর দফতর যা বলে তা অনুসরণ করা চাই। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নেহরু-আদর্শের অনুরাগী প্রধানদের বরখাস্ত করা হয়েছে। প্রক্রিয়াটি এখনো চলছে।’ নায়ারের লেখাটি ২৪ জুন বাংলাদেশ প্রতিদিনে প্রকাশিত হয়েছে।

সুশীলদের দেশপ্রেমের নমুনা

গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা, প্রখ্যাত মুক্তিযোদ্ধা ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেছেন, স্বাধীনতাযুদ্ধে ভারতের কাছে আমাদের যে ঋণ ছিল তা আমরা আগেই শোধ করেছি। এখন যেটা টানছি সেটা সুদ। ভারত সমৃদ্ধ দেশ হওয়ার পরও আমাদের ওপর থেকে সুদ আদায় করে নিচ্ছে, যেভাবে পূর্ব পাকিস্তানের ওপর থেকে পশ্চিম পাকিস্তান জোর-জুলুম করে আদায় করেছিল। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ‘বাংলাদেশকে মরুভূমি বানানোর ভারতীয় পানি আগ্রাসন রুখে দাঁড়ান’ শীর্ষক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, একটি দেশের সাথে ট্রানজিট হতে পারে। এ জন্য দেশের রাস্তাঘাটের যে ক্ষতি হবে তার পূরণের বিনিময়েই এটা সম্ভব। কিন্তু বর্তমান সরকার ভারতকে যে ট্রানজিট দিয়েছে তা নামমাত্র ক্ষতিপূরণে। তিনি আরো বলেন, আগে দেখতাম, সরকার দেশবিরোধী কোনো চুক্তি করলে রেহমান সোবহানের মতো সুশীলসমাজের লোকেরা সরকারের সমালোচনা করতেন। এখন দেখছি, তাদের মুখ বন্ধ। তাহলে কি বুঝব, ভারতের মুদ্রা দিয়ে তাদের মুখ বন্ধ রাখা হয়েছে? বর্তমান সরকার অগণতান্ত্রিক ও অনির্বাচিত সরকার, আর এ অনির্বাচিত সরকারকে ভারতই টিকিয়ে রেখেছে তাদের নিজের স্বার্থে বলেও মন্তব্য করেন জাফরুল্লাহ।

jjshim146@yahoo.com