ইসিতে তাবিথ-ইশরাকের অভিযোগ

0
537
blank
blank

ঢাকা উত্তর সিটি নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও দক্ষিণ সিটির প্রার্থী প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন স্ব স্ব রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন।

ঢাকা উত্তর সিটির আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী আতিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লংঘনের অভিযোগ এনেছেন তাবিথ আউয়াল। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে তা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন ঢাকা উত্তর সিটির রিটার্নিং কর্মকর্তা।

অপরদিকে পুরানো মামলায় কাউন্সিলর প্রার্থীদের গ্রেফতার ও ভয়-ভীতি দেখানোর অভিযোগ করেন ইশরাক হোসেন। তার অভিযোগের প্রেক্ষিতে রিটার্নিং কর্মকর্তা পুরানো মামলায় প্রার্থীদের গ্রেফতার না করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অনুরোধ জানান। শনিবার তারা লিখিতভাবে এসব অভিযোগ করেন।

শনিবার রাজধানীর গোপীবাগে সাদেক হোসেন খোকা কমিউনিটি সেন্টারে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে অভিযোগ করেন বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন। অভিযোগে তিনি বলেন, প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে সরকারদলীয় কাউন্সিলর প্রার্থীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অসাধু কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশে হুমকি দিচ্ছেন। প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে বিভিন্ন মামলার সম্মুখীন হতে হবে বলেও হুমকি দেয়া হচ্ছে।

মেয়র প্রার্থী হিসেবে নিজে হুমকি পেয়েছেন কি না-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ইশরাক হোসেন বলেন, প্রশ্নই ওঠে না। আমাকে কে হুমকি দেবে? এখন পর্যন্ত ঢাকা দক্ষিণে তিনজন কাউন্সিলরকে হুমকি দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এখন থেকে নির্বাচন পর্যন্ত নতুন করে কোনো পুরোনো মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আদেশ যাতে না হয়, এ বিষয়ে তিনি রিটার্নিং কর্মকর্তাকে পদক্ষেপ নিতে বলেছেন। যেসব কাউন্সিলর প্রার্থীরা হুমকির সম্মুখীন হচ্ছেন, তাদের কীভাবে নিরাপত্তা দেয়া যায় এই বিষয়েও কথা বলেছেন। রিটার্নিং কর্মকর্তা তাকে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন। তবে অতীতেও এমন আশার বাণী শুনেছেন জানিয়ে ইশরাক বলেন, অতীতে অভিযোগ দেয়ার পর কমিশনের তরফ থেকে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। এবার পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা আশ্বাসের বাণী শুনিয়েছেন। আমরাও আশাবাদী হতে চাই।

পরে দক্ষিণের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আবদুল বাতেন সাংবাদিকদের বলেন, অনেক আগের মামলা পুনরুজ্জীবিত করে এখন কোনো আদেশ বা ব্যবস্থা নেয়া হলে তা অনাকাঙ্খিত হবে। তবে ফৌজদারি মামলা হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যাবে। তিনি বলেন, পুরোনো মামলায় শাস্তি বা পরোয়ানা হয়ে থাকলে তফসিল ঘোষণার আগেই পদক্ষেপ নেয়া উচিত ছিল। এখন পুরোনো মামলায় নতুন করে ব্যবস্থা নেয়া হলে তা ঠিক হবে না। নির্বাচনের পর ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। তবে যদি এমন হয় ফৌজদারি মামলা আছে, তা নির্বাচনের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়, সেটা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া যাবে।

বিএনপি প্রার্থীর লিখিত অভিযোগ জমা দেয়া প্রসঙ্গে আবদুল বাতেন বলেন, লিখিত অভিযোগ তারা পরীক্ষা করে দেখবেন। মামলার বিস্তারিত না দেখে মন্তব্য করা ঠিক না।

অপরদিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী আতিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বিএনপির প্রার্থী তাবিথ আউয়াল। শনিবার নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (ইটিআই) ভবনে রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল কাসেমের কাছে তাবিথের পক্ষে এটি জমা দেন জুলহাস উদ্দিন।

অভিযোগপত্রে তাবিথ আউয়াল বলেন, ৪ জানুয়ারি শনিবার সকাল ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচন-২০২০ মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আতিকুল ইসলাম ঢাকা উত্তর নির্বাচনী এলাকার মধ্যে গুলশান-১ এলাকার গুলশান পার্কে দলীয় নেতা কর্মী ও সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে একটি নির্বাচনী মঞ্চ করে, মাইক এবং সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার করত নিজের পক্ষে ভোট প্রার্থনা করেন ও কর্মীদেরকে ভোটারদের কাছে যাওয়ার জন্য দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য প্রদান করেন যা সিটি করপোরেশন (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা, ২০১৬ এর স্পষ্ট লংঘন ও গর্হিত অপরাধ বটে। নির্বাচন কমিশন আমাদের আশ্বাস দিয়েছিলো যে নির্বাচনে লেভেল প্লেইং ফিল্ড বিদ্ধমান থাকবে এবং নির্বাচন আচরণ বিধি সকল প্রার্থীর জন্য সমভাবে প্রয়োগ করা হবে এবং তা তদারকীর জন্য মাঠ পর্যায়ে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোতায়ন থাকবে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, দুঃখের বিষয় আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী সিটি করপোরেশন (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা, ২০১৬ লংঘন করে একটি নির্বাচনী জনসভা করলেন, কিন্তু আপনার অধিনস্ত কোন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বা কোন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এই বিধিমালা লংঘকারী প্রার্থীকে আইনের আওতায় আনার চেষ্টাও করেননি। আমার এই অভিযোগের সপক্ষে কিছু স্থির চিত্র সংযোজন করলাম। সিটি করপোরেশন (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা, ২০১৬ এর বিধি-৫ অনুসারে প্রতীক বরাদ্দের পূর্বে প্রার্থী বা তার পক্ষে কোন রাজনৈতিক দল, অন্য কোন ব্যক্তি, সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান নির্বাচনী প্রচারণা করতে পারবে না।

অভিযোগ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল কাসেম বলেন, বিএনপি প্রার্থীর পক্ষ থেকে অভিযোগটি পেয়েছি। ওই এলাকায় ম্যাজিষ্ট্রেট যিনি আছেন আমি তার কাছে এটি পাঠাব, সেটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে বলব। প্রতিবেদন পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।